Other Divisions |
Barisal Division |
Khulna Division |
Chittagonj Division |
Rajshahi Division |
|
|
|
|
মাদারীপুর জেলা
দেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত ঢাকা বিভাগের অনর্গত একটি জেলা মাদারীপুর। সুজলা-সুফলা শস্য শ্যামল এ জেলাটির প্রাকৃতিক পরিবেশ খুবই সুন্দর। মাদারীপুর জেলার আয়তন ১১২৫ বর্গ কিলোমিটার এবং ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১১০০ জন। মাদারীপুরের উত্তরে ফরিদপুর জেলা এবং পদ্মা নদী যার অপর তীরে মুন্সিগঞ্জ জেলা। পূর্বে শরীয়াতপুর জেলা, পশ্চিমে ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলা, এবং দক্ষিণে গোপালগঞ্জ ও বরিশাল জেলা। চারটি উপজেলা নিয়ে মাদারীপুর জেলা গঠিত। এগুলো হল মাদারীপুর সদর, কালকিনি, রাজৈর এবং শিবচর। মাদারীপুর জেলার মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে আড়িয়াল খাঁ, কুমার সহ বেশ কয়েকটি নদী। আর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে খড়স্রোতা পদ্মা নদী।
ইতিহাস ঐতিহ্য
প্রাচীনকাল থেকে এ অঞ্চল ব্যবসা-বাণিজ্যে বেশ উন্নত ছিল। নদীবিধৌত অঞ্চল হওয়ায় অন্যান্য অঞ্চলের সাথে এ এলাকার যোগাযোগ বেশ সুগম ছিল। ব্রিটিশ আমলে কুমার নদের তীরে গড়ে উঠেছিল টেকেরহাট বন্দর যা আজও সগৌরবে নিজের জৌলুশ নিয়ে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে। টেকেরহাট বন্দরটি বর্তমানে রাজৈর থানার আওতাধীন।
ব্রিটিশ আমলে এ অঞ্চল থেকেই শুরু হয়েছিল বিখ্যাত ফারায়েজি আন্দোলন। হাজী শরীয়াতুল্লাহর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ অঞ্চলের মানুষ একত্রিত হয়েছিল ফারায়েজি আন্দোলনে। এছাড়াও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুথ্যান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ সহ সকল আন্দোলন সংগ্রামে ছিল মাদারীপুরবাসীর সক্রিয় অংশগ্রহন। ১৮৫৪ সালে মাদারীপুরকে ফরিদপুর জেলার একটি মহকুমা হিসাবে ঘোষনা করা হয়। তার ১২০ বছর পর ১৯৮৪ সালে মাদারীপুর স্বতন্ত্র জেলা হিসাবে স্বীকৃতি পায়।
চৌদ্দ শতকের দিকে প্রখ্যাত সুফী ও সাধক কুতুব ই জাহান হযরত বদিউদ্দিন আহমদ জিন্দা শাহ মাদার (রহঃ) সিরিয়া থেকে ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে মাদারীপুর আসেন। তাঁর নামানুসারেই মাদারীপুর জেলার নামকরন করা হয়।
|
মাদারীপুর লেক |
দর্শনীয় স্থান
মাদারীপুরের চিত্তাকর্ষক স্থানের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে লেকভিউ পার্ক। ঐতিহাসিক শকুনি লেকের পারে অবস্থিত লেকভিউ পার্কের এরিয়ার মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু মানসম্মত রেস্টুরেন্ট এবং শিশুদের বিনোদনের জন্য ছোট খাট কিছু রাইড। রাতের বেলা লেকের ভেতরে জ্বলে ওঠা রঙিন লাইটগুলো এ এলাকার সৌন্দর্য হাজার গুন বৃদ্ধি করে দেয়। মাদারীপুরের সবচেয়ে বেশি দর্শনার্থী এখানেই আসেন।
আড়িয়াল খাঁ নদীর পারে নির্মিত শহর রক্ষা বাধও অনেক বেশি সুন্দর। প্রায় আট/নয় কিলোমিটার দীর্ঘ এ বাধের উপর দিয়ে হাটতে হাটতে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করা আসলেই অন্যরকম এক অনুভূতি এনে দেয়। তাছাড়া আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর নির্মিত ৭ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুও দর্শনার্থীদের অনেক পছন্দের।
এছাড়াও কালকিনি উপজেলার খাতিয়ালে অবস্থিত সেনাপতির দিঘি, সদর উপজেলার ঝাউদিতে অবস্থিত ঝাউদি গিরি, আউলিয়াপুর নীলকুঠি, আলসি কাজী বাড়ি মসজিদ, মঠের বাজারের মঠ, মিঠাপুর জমিদার বাড়ি, কুলপুদ্দি জমিদার বাড়ি (বর্তমান আবহাওয়া অফিস) এবং বানরের অভয়অরণ্য চরমুগুরিয়া।
|
সেনাপতির দিঘী |
দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ঝাউদি গিরি বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন।
মাদারীপুরের মিষ্টি অনেক বেশি বিখ্যাত। পুরাতন কোর্টের মোড়ে অবস্থিত জীবন মিষ্টান্ন ভান্ডারের ক্ষীরপুরি, রসগোল্লা আর ছানাজেলাপি অনেক বেশি সুস্বাদু। মাদারীপুরের খেজুরের গুড়ও অনেক বিখ্যাত।
যাতায়াত
মাদারীপুরে কোন রেললাইন নেই। কোন এয়ারপোর্টও নেই। তবে সড়কপথে সারাদেশের সাথে মাদারীপুরের যোগাযোগ রয়েছে। ঢাকার সায়েদাবাদ এবং যাত্রাবাড়ী টার্মিনাল থেকে সার্বিক পরিবহণ, চন্দ্রা পরিবহণ এবং সোনালী পরিবহণের বাস সরাসরি মাদারীপুর আসে। গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকেও সার্বিকের কিছু বাস মাদারীপুর আসে। এসব বাসগুলো প্রায় সবই লঞ্চ পারাপার। তাছাড়া ঢাকা থেকে বরিশালগামী গ্রিনলাইন, ঈগল, সাকুরা পরিব্বহণসহ বরিশালগামী যেকোন বাসে করে মাদারীপুরের মস্তফাপুর স্টেশনে নেমে মাদারীপুর আসা যায়। গ্রিনলাইন পরিবহণের বাসগুলো রাজারবাগ পুলিশ লাইনের অপজিটে অবস্থিত গ্রীনলাইনের নিজস্ব কাউন্টার থেকে ছেড়ে আসে।
এছাড়াও গুলিস্তান, সায়েদাবাদ বা যাত্রাবাড়ী থেকে বেশকিছু লোকাল বাস মাওয়া ঘাট পর্যন্ত আসে। এসব বাসে ঘাট পর্যন্ত এসে লঞ্চ বা স্পিড বোটে নদী পার হয়ে মাদারীপুরগামী অনেক লোকাল বাস পাওয়া যায়।
মাদারিপুরের স্থানীয় খবরের কাগজ পরতে এখানে ক্লিক করুন।
For any suggestions or comment, please contact us. Thanks |