Sirajganj District |
বাংলা সংবাদপত্র | সিরাজগঞ্জ সংবাদপত্র | সিরাজগঞ্জ সরকারী তথ্য বাতায়ন | বাংলা ওয়াজ শুনুন | ফ্রিল্যান্স জবস |
|
সিরাজগঞ্জ জেলা রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি বৃহদাকৃতির জেলা। তাতশিল্প এ জেলাকে সারাবিশ্বের কাছে পরিচিত করে রেখেছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের যেকোন জেলায় যাওয়ার প্রবেশদ্বার এটি। খরস্রোতা যমুনার পারের সংগ্রামী মানুষের কন্ঠে এককালে ধ্বনিত হত, “আমার যমানার জল দেখলে কালো ছান করিতে লাগে ভাল” গানটি। যদিও সময়ের পরিক্রমায় জৌলুশ হারিয়ে যমুনা আজ ধু ধু বালুচর কিন্তু ইতিহাসের পাতায় স্বর্নাক্ষরে লেখা রয়ে গেছে সর্বনাশা যমুনার মরণ ভাঙ্গনের গল্প। বৃহদাকৃতির এ জেলাটির আয়তন ২৪৯৮ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১২০০ জন। এ জেলাটিকে চারদিক থেকে ঘিরে রয়েছে পাবনা, বগুরা, টাঙ্গাইল, জামালপুর এবং নাটোর জেলা। সিরাজগঞ্জ জেলাটি নয়টি উপজেলা নিয়ে গঠিত। এগুলো হল, সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, কামারখন্দ, চৌহুলী, কাজীপুর, রায়গঞ্জ, শাহাজাদপুর, তাড়াশ এবং উল্লাপাড়া। জেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে খরস্রোতা যমুনা নদী। সপ্তম শতাব্দীর পর থেকে সিরাজগঞ্জ এবং আশেপাশের বেশ কিছু এলাকা সারাবছর পানির নিচে থাকত। এ অঞ্চলে ঐ সময় কোন জনবসতি ছিল না। ধীরে ধীরে সমদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এবং পলিমাটি জমে যাওয়াসহ আরও অনেক ভৌগলিক কারনে এ এলাকা বছরের চার-পাঁচ মাস শুকনা থাকত। ঐ সময় আশেপাশের এলাকার লোকজন এখানে শীতকালীন ফসল আবাদ করত। পরবর্তীতে তাদের মধ্যেকার কিছু পরিশ্রমী লোক এ অঞ্চলের কিছু জায়গাকে সারা বছর বসবাসের উপযোগী রাখার জন্য বাধ নির্মান করে। এভাবেই জনবসতির গোড়াপত্তন শুরু হয় এ এলাকায়। ১২০৪ সালে ইখতিয়ার ইদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খিলজি বাংলা জয় করার পর এ অঞ্চল জুড়ে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। বখতিয়ার খিলজির বাংলা বিজয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই এ অঞ্চলের কঠোর পরিশ্রমী মানুষগুলোর মধ্যে ইসলামের ব্যপক প্রসার লাভ করে এবং এ এলাকার প্রায় সব মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী হয়ে যায়। সিরাজগঞ্জ জেলার নামকরনের ব্যপারে একটি মতামতই সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত। বৃটিশ শাসনামলে লর্ড কর্নওয়ালিসের সময় সিরাজ চৌধুরি নামের এক সম্ভ্রান্ত জমিদার ছিলেন যিনি বৃটিশদের সাথে বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে মোটামোটি স্বাধীনভাবেই নিজের জমিদারি পরিচালনা করতেন। তার নামানুসারেই এ এলাকার নামকরন হয় সিরাজগঞ্জ। ১৮৮৪ সালে পৃথক জেলা হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়ার আগে সিরাজগঞ্জ ময়মনসিংহ এবং পাবনা জেলার মহকুমা ছিল। দর্শনীয় স্থান যমুনা সেতুর দুই তীরে নির্মিত সেতু রক্ষা বাধ স্থানীয় জনগন এবং আশেপাশের লোকজনের অনেক বেশি পছন্দের জায়গা। মনমুগ্ধকর বাধের উপর দাঁড়িয়ে যমুনার পানিতে সুর্যাস্ত দেখতে দেখতে সত্যিই হারিয়ে যাওয়া যায় কোন এক অজানা জগতে। এছাড়া অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে সিরাজগঞ্জ সদরের লোহার ব্রিজ, তাড়াশের চন্দন বিল, রবীন্রনাথের কুঠিবারী এবং বেশকিছু পুরানো মসজিদ ও মন্দির।
পানিতোয়া এবং ধানসিঁড়ির দই সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী এবং বিখ্যাত খাবার। সিরাজগঞ্জের তাতশিল্প অনেক বেশি বিখ্যাত। বিশেষ করে সিরাজগঞ্জে তৈরি লুঙ্গি, গামছা এবং শাড়ি সারা পৃথিবী বিখ্যাত। ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জের দূরত্ব ১৪২ কিলোমিটার। সড়ক এবং রেলপথে যাতায়াতের সুব্যবস্থা রয়েছে। ঢাকার যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ এবং মহাখালী বাস টার্মিনালে সিরাজগঞ্জগামী বাস পাওয়া যায়। এছাড়া উত্তর এবং পশ্চিমাঞ্চলগামী সকল ট্রেনেই সিরাজগঞ্জ যাওয়া যায়। সিরাজগঞ্জ স্থানীয় খবরের কাগজ পরতে এখানে ক্লিক করুন। For any suggestions or comment, please contact us. Thanks |