|
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা
বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত একটি জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। জেলাটির পূর্বনাম ছিল নবাবগঞ্জ। পরবর্তীতে এর নাম পরিবর্তন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রাখা হয়। তবে জেলাটিকে এখনও অনেকেই নবাবগঞ্জ নামে ডাকে। আবার অনেকেই চাঁপাই নামেঈ চেনে। দেশ ভাগের আগে এ জেলাটি ভারতের মালদহের অন্তর্গত ছিল। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় এ অঞ্চলটিকে রাজশাহীর অন্তর্গত করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আয়তন ১৭০২ বর্গ কিলোমিটার এবং ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ৯৭০ জন। এটি বাংলাদেশের মানচিত্রের উত্তর সীমান্তের সবচেয়ে পশ্চিমের জেলা। জেলাটির পূর্বে রাজশাহী ও নওগাঁ জেলা, দক্ষিণে পদ্মা নদী এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলা। পাঁচটি উপজেলা নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা গঠিত। এগুলো হল চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, গোমস্তাপুর, নাচোল, ভোলাহাট এবং শিবগঞ্জ উপজেলা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার লোকজন বাংলায় কথা বললেও তাদের উচ্চারনের পদ্ধতি প্রমিত বাংলা থেকে আলাদা। তাদের উচ্চারনে পশ্চিমবঙ্গের উচ্চারন পদ্ধতির প্রভাব বিদ্যমান।
ইতিহাস ঐতিহ্য
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নামটি অতি সাম্প্রতিকালের। ২০০১ সালে এ জেলার সাধারম মানুষের আন্দোলনের কারনে জেলার নাম নবাবগঞ্জের পরিবর্তে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রাখা হয়। জানা যায়, বৃটিশ আমলের আগে এ অঞ্চলে মুর্শিদাবাদ জেলার নবাবদের আবাসভূমি ছিল বলে এ অঞ্চলের নামকরন করা হয় নবাবগঞ্জ। আর চাঁপাই নামটি এসেছে একটু অন্যভাবে। এককালে এ এলাকায় চম্পারানী নামে এক সুন্দরী বাইজির বসবাস ছিল যার নাচের খ্যাতি আছেপাশের সব এলাকায় ছড়িয়ে পরেছিল। অচিরেই সে সবার প্রিপাত্রী হতে শুরু করে। পরবর্তীতে তার নামের একটি অংশ এলাকার নামের সাথে যুক্ত করে দেয়া হয়।
বহু পূর্ব থেকেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মানুষ ছিল বেশ সাহসী এবং সংগ্রামী। তাদের এ আন্দোললন আর সংরামের ঐতিহ্যের প্রমান মেলে ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। এছাড়াও স্বাধীনতার পূর্ব ও পরবর্তী সব ধরনের আন্দোলন সংগ্রামে এ অঞ্চলের মানুষের ছিল স্বতঃপুত অংশগ্রহন। ব্রেন্দ্র অঞ্চলের এ উর্ব্র মাটি আম চাষের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী হওয়ায় বহু পূর্ব থেকেই এ জেলায় প্রচুর আমবাগান গড়ে উঠেছে। এ জেলার আম সারা দেশের মানুষের পছন্দের তালিকায় রয়েছে।
দর্শনীয় স্থান
বেশকিছু ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। এর মধ্যে শিবগঞ্জের শাহাজাদপুরে অবস্থিত ছোট সোনা মসজিদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে অবস্থিত দারাসবাড়ি মসজিদ, নাচোল উপজেলায় অবস্থিত আলপ্না গ্রাম টিকাইল, শিবগঞ্জে অবস্থিত খানিয়াদিঘি মসজিদ, তিন মম্বুজ মসজিদ এবং তোহাখানা উল্লেখযোগ্য।
যাতায়াত
রাজধানী ঢাকার গাবতলী এবং মহাখালী টার্মিনাল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী এসি ও নন এসি বাস পাওয়া যায়। সময় লাগে আট ঘন্টার কাছাকাছি। ট্রেনে যেতে চাইলে প্রথমে ঢাকার কমলাপুর থেকে ট্রেনে রাজশাহী যেতে হবে তারপর বাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে হবে। ঢাকা থেকে সরাসরি চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী কোন ট্রেন নেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্থানীয় খবরের কাগজ পরতে এখানে ক্লিক করুন।
For any suggestions or comment, please contact us. Thanks |