|
বরগুনা জেলা
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবশিত বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত একটি জেলা বরগুনা। প্রলয়নকারী ঘুর্নিঝর সিডরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা হল বরগুনা। একপাশে সাগর আর ভেতর দিয়ে জালের মত বয়ে যাওয়া বেশ কয়েকটি নদী এ জেলাকে যেন অসামান্য এক সৌন্দর্যের চাদরে ঢেকে রেখেছে। বরগুনা জেলার আয়তন ১৯৩৯ বর্গ কিলোমিটার এবং ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ৪৬০ জন। বরগুনা জেলার দক্ষিণে পটুয়াখালী জেলা এবং সুন্দরবন, উত্তরে ঝালকাটি, বরিশাল এবং পিরোজপুর, পশ্চিমে পিরোজপুর এবং বাগেরহাট জেলা। ছয়টি উপজেলা নিয়ে বরগুনা জেলা গঠিত। এগুলো হল- বরগুনা সদর, আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা, বামনা এবং বেতাগি উপজেলা।
ইতিহাস ঐতিহ্য
বরগুনা জেলা লোক সংস্কৃতিতে পরিপূর্ন একটি জেলা। এক সময় এখানে মাঠভরা ধান, সাগরের টাটকা মাছ আর প্রচুর মহিষের দুধ পাওয়া যেত। সারাদিনের ক্লান্তিময় কাজের শেষে রাতের নিস্তব্ধতাকে ছাপিয়ে শোনা যেত হেয়ালি প্রেমিকের বাশের বাশির সুর। এখানে ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির মধ্যে রাখাইন সংস্কৃতি অন্যতম। এক সময় বরগুনা সহ সবগুলো উপকূলীয় জেলাই তৎকালীন বাকেরগঞ্জ (বর্তমান বরিশাল) এর অধীনে ছিল। ১৯৬৯ সালে বরগুনাকে পটুয়াখালী জেলার অধীনে একটি মহকুমা করা হয় এবং পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে স্বতন্ত্র জেলা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।
বরগুনা জেলার নামকরন কিভাবে হল তা নিয়ে মতভেদ আছে। তবে এক সময় এ অঞ্চল গভীর অরন্যে আচ্ছাদিত ছিল। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কাঠ ব্যবসায়ীরা এখানে কাঠ সংগ্রহের জন্য আসত। এখানের খরস্রোতা নদীগুলো পারি দেয়ার জন্য তারা অনুকুল প্রবাহ বা বড় গোনের অপেক্ষায় থাকত। এ থেকেই এ অঞ্চলের নাম বরগুনা হয়েছে বলে ধারনা করা হয়।
দর্শনীয় স্থান
সাগরের কোল ঘেষা এ জেলাটিতে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হল তালতলী উপজেলায় অবস্থিত শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত। একপাশে সবুজ জাহুবন আর অন্যদিকে অথৈ সাগরের ঊর্মিমালা। এ যেন নিসর্গের এক অন্য রূপ। এছাড়াও রয়েছে পাথরঘাটা উপজেলায় অবস্থিত লালদিয়া বন ও সমুদ্র সৈকত, হরিণঘাটা পর্যটন কেন্দ্র, বেতাগী উপজেলায় অবস্থিত মোগল সম্রাজ্যের স্থাপনা বিবি চিনি মসজিদ, এবং টেংরাগিরি ইকোপার্ক।
যাতায়াত
ঢাকা থেকে সড়ক ও নদীপথে বরগুনা যাওয়া যায়। ঢাকার সায়েদাবাদ এবং গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে দ্রুতি পরিবহন, আব্দুল্লাহ পরিবহন সহ বেশ কিছু বাস প্রতিদিন বরগুনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। নদীপথে আসতে চাইলে সদরঘাট থেকে এম ডি যুবরাজ, এম ডি নুসরাত সহ কয়েকটি বড় এবং মাঝারি লঞ্চ সরাসরি বরগুনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
পটুয়াখালীর স্থানীয় খবরের কাগজ পরতে এখানে ক্লিক করুন।
For any suggestions or comment, please contact us. Thanks |