Sylhet District |
বাংলা সংবাদপত্র | সিলেট সংবাদপত্র | সিলেট সরকারী তথ্য বাতায়ন | বাংলা ওয়াজ শুনুন | ফ্রিল্যান্স জবস |
|
সিলেট জেলা দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এবং সুন্দর জেলা সিলেট। শাহাজালের পূন্যভূমি খ্যাত এ জেলাটিকে অনেকেই বাংলাদেশের আধ্যাত্বিক রাজধানী বলে থাকেন। প্রায় শত বছর আগে থেকেই সিলেটের প্রচুর লোকজন দেশের বাহিরে অবস্থান করছে। এদের মধ্যে সিংহভাগই বৃটেনে অবস্থান করছে। দেশের রেমিটেন্সের একটি বিরাট অংশ তাদের হাত ধরে বাংলাদেশে আসার পাশাপাশি লোকমুখে সিলেটের নামও পরে যায় বাংলাদেশের লন্ডন। সিলেট জেলার আয়তন ৩৪৫২ বর্গ কিলোমিটার এবং ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ১০০০ জন। সিলেটের উত্তরে ভারতের মেঘালয় এবং খাসিয়া পাহাড়, পূর্বে ভারতের আসাম, দক্ষিণে মৌলভীবাজার, পশ্চিমে হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলা। তেরটি উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট জেলা। এগুলো হল- বালাগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, বিশ্বনাথ, কোম্পানীগঞ্জ, ফেষ্ণুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা, ওসমানী নগর এবং সিলেট সদর। বিভাগীয় শহর হওয়ার কারনে এখানে রয়েছে একটি সিটি কর্পোরেশন। সিলেটের অন্যতম নদী সুরমা এবং কুসিয়ারা। ইতিহাস ঐতিহ্য বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী জেলা সিলেট। তবে তৎকালীন সিলেটের আয়তন আরও অনেক বেশি ছিল। বর্তমান ময়মনসিংহ এলাকার কিছু অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল সিলেট। মুসলিম শাসকদের শাসনামলে সিলেট অঞ্চলের নাম ছিল জালাজাবাদ। তৎকালীন হিন্দু রাজা গৌর গোবিন্দের সাথে ইসলাম প্রচারক শাহ জালাল (রহ) এর একটি যুধ হয়েছিল এবং যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছিল গৌর গোবিন্দ। তাই শাহ জালালের নামের স্মৃতি রক্ষার্থেই এ অঞ্চলের নাম রাখা হয়েছিল জালালাবাদ। বৃটিশ আমলের শেষের দিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপর এ এলাকার প্রচুর লোকজন বিদেশে পারি জমাতে শুরু করে। তখন থেকে এ এলাকার প্রচুর উন্নতি হতে থাকে। সেই সাথে দেশের রেমিটেন্স বৃদ্ধিতেও এসব প্রবাসীরা বিরাট ভূমিকা পালন করে। সিলেট জেলার নামকরন নিয়ে অনেক গল্প প্রচলিত আছে। কেউ কেউ মনে করেন এক সময় এখানকার এক ধনী ব্যক্তির শিলা নামে এক সুন্দরী মেয়ে ছিল। সেই মেয়ের স্মৃতি রক্ষার্থে ঐ ব্যক্তি শিলাহাট নামে একটি হাট প্রতিষ্ঠা করেন যার থেকে এ অঞ্চলের নাম হয় সিলেট। আবার অনেকে মনে করেন শাহ জালাল (রহ) যখন ৩৬০ জন আউলিয়া সহ এ অঞ্চলে আসেন তখন তাদের ঠেকানোর জন্য গৌর গোবিন্দ বিভিন্ন স্থানে বড় বড় শিলাখন্ড রেখে দিয়েছিল। কিন্তু সেসব শিলাখন্ড তাদের পথ আটকাতে পারে নি। শিলা খন্ডের হটে যাওয়া বা পরাজিত হওয়া থেকে এ অঞ্চলের নাম হয় সিলেট। দর্শনীয় স্থান দুটি পাতা আর একটি কুড়ির দেশ খ্যাত সিলেট জেলায় রয়েছে বেশ কিছু নয়নাভিরাম দর্শনীয় স্থান। এ জেলাটি বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটন জেলা হিসাবেও বিবেচিত হয়। শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই নয় বরং সিলেটের রয়েছে প্রসিদ্ধ ইতিহাস। সিলেটের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে সর্বপ্রথম পর্যটকদের নজর কাড়ে জাফলং।
গোয়ান হাট উপজেলায় অবস্থিত এ জাফলং একদম ভারত সীমান্তে অবস্থিত। পাথরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চলা স্বচ্ছ পানিতে পা ডুবিয়ে মুহূর্তেই ভুলে যাওয়া যায় সব কষ্ট। এছাড়াও একই উপজেলায় অবস্থিত বিছানাকান্দিও অনেক বেশি জনপ্রিয়। এছাড়াও ভোলাগঞ্জ, লোভাছড়া, তামাবিল, রাতারগুল, সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্না, পান্তুমাই ঝর্না, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, লালখান, হাকালুকি হাওর, ডিবির হাওর, শাহ জালাল এবং শাহ পরাণের মাজার এবং শাহ জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ জেলার অন্যতম কিছু দর্শনীয় স্থান। আসলে সিলেট জেলায় এত বেশি দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা এত সামান্য পরিসরে লিখে শেষ করা সম্ভব নয়। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে। সিলেটের স্পটগুলোর আসল সৌন্দর্য পেতে হলে অবশ্যই বর্ষাকালে যেতে হবে। বর্ষার সময় ছাড়া অন্য সময় ঝর্নাগুলো থাকে পানিহীন আর হাওরগুলো থাকে ধু ধু মাঠ। যাতায়াত ঢাকা থেকে সড়ক, রেল এবং আকাশপথে সিলেট যাওয়া যায়। ঢাকার কমলাপুর, সায়েদাবাদ, গাবতলী, কল্যানপুর সহ সবগুলো টার্মিনাল থেকে সিলেটগামী এসি এবং নন এসি বাস পাওয়া যায়। গ্রীন লাইন পরিবহনের এসি বাসগুলো রাজারবাগের নিজস্ব ডিপো থেকে ছেড়ে যায়। এছাড়া কমলাপুর থেকে প্রতিদিন দুটি ট্রন সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বিমানেও যাওয়ার সুযোগ আছে। সিলেট স্থানীয় খবরের কাগজ পরতে এখানে ক্লিক করুন। For any suggestions or comment, please contact us. Thanks |